ফরিদপুর জেলার উপজেলাসমূহ >> সদরপুর উপজেলা
সদরপুর উপজেলা
- প্রতিষ্ঠা সালঃ ১৯৮৪ সাল
- আয়তনঃ ২৯০.২১ বর্গকিলোমিটার
হিন্দু জমিদার প্রভাবান্বিত এলাকা ছিল সদরপুর। জমিদারদের দালাল শ্রেনীর লোক নিয়োজিত চিলা পাড়ায় পাড়ায়। ফলে জমিদারদের অত্যাচারের নির্যাতন এবং অন্যায়ভাবে ধার্যকৃত করভারে সর্বশান্ত ছিল সাধারন মানুষ তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি এত বেশি ছিল যে, মুসলমানরা স্বীয় অনুষ্ঠানাদি যথাযথভাবে পালন করতে পারত না। ধর্মীয় জলসা ও গরু জবেহ প্রায় নিষিদ্ধ ছিল। ঈদের নামাজ অনুষ্ঠানে বাধা দেয়া হত। ঈদের দিনে হাল নিয়ে মুসলমানের মাঠে কাজ করতো। তারা পূজা-পার্বনে পূজা দেখা ও মিষ্টি খাবার জন্য গোসল করে হিন্দু জমিদারদের বাড়িতে যেত।
সদরপুরের বিভিন্ন গ্রামের শেষে রশি কথার এক অভিনব শব্দ প্রয়োগ দেখা যায়। মোগল আমলে রশি মাপে জায়গা-জমির পত্তন দেয়া হত বলে রশি শব্দ যোগে এলাকার নাম হয়েছে। আবার কেউ কেই মনে করেন, পদ্মা নদী থেকে গ্রামের দুরত্ব অনুযায়ী রশি শব্দটি এসেছে। যেমন আটরশি, বাইশ রশি, চৌদ্দ রশি, নয় রশি।
লোক মুখে জানা যায় যে, স্থানীয় বাইশ রশি জমিদারদের যাতায়াতের জন্য বর্তমান থানার উত্তর পার্শ্বে ভূবনেশ্বর নদীতে তৎকালে বড় বড় পানশী নৌকা রাখিত এবং যখনই এই স্থানে আসার প্রয়োজন হইত তখনই ‘‘সদর’’ কথাটি ব্যবহার করিত। এ থেকেই স্থানটির নাম করন সদরপুর হয়। সদরপুরের বিভিন্ন গ্রামের নামের শেষে রশি শব্দের প্রয়োগ দেখা যায়। মোগল আমলে রশির মাপে(১০০ হাত)জায়গা জমির পত্তন দেয়া হত বলে রশি শব্দযোগে এলাকার নাম হয়েছে। এর থেকে মোগল যুগে এই এলাকার গুরত্বপূর্ণ অবস্থানের একটা ধারণা পাওয়া যায়। আনন্দ নাথ রায়ের ফরিদপুরের ইতিহাস গ্রন্থে সদরপুরের যে উল্লেখ পাওয়া যায় সেখানে সদরপুরের কিছু এলাকা ফরিদপুর স্টেশন(গোপালপুর, কৃষ্ণপুর প্রভৃতি এলাকা), কিছু এলাকা থানা নগরকান্দা (নয়াগ্রাম,যাত্রাবাড়ী, ঠেঙ্গামারী প্রভৃতি),কিছু এলাকা ভাঙ্গা থানা(সাড়ে সাতরশি, চরব্রাহ্মন্দী, দশহাজার,শ্যামপুর, সদরপুর প্রভৃতি) এর অধীন ছিল। পরবর্তীকালে এই এলাকাগুলো একত্রিত করে সদরপুর সার্কেলের যাত্রা শুরু হয়। পাকিস্তানে আমলে সদরপুরে উন্নয়ন সার্কেলের অফিস ছিল বাইশ রশি জমিদার বাড়ীতে। ১৯৭৬ সালের ১৬ মার্চ অফিস বাইশ রশি জমিদার বাড়ী হতে থানা প্রশিক্ষণকেন্দ্র(T.T. & D.C) তে স্থানান্তর করা হয়। সেসময় সার্কেল অফিসার(উন্নয়ন) হিসেবে কর্মরত ছিলেন আনন্দ চন্দ্র রায়। ৭ নভেম্বর ১৯৮২ সালে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক লে: জে: হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদ কর্তৃক সদরপুরকে আপগ্রেড থানা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। প্রথম থানা নির্বাহী অফিসার ছিলেন জনাব মো: আ: ছালাম। ১৯৮৪ সালে সদরপুরকে উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
সদরপুর উপজেলার উত্তরে চরভদ্রাসন ও ফরিদপুর সদর। পূর্বে আড়িয়াল খাঁ ও পদ্মা নদী ঢাকা জেলাকে পৃথক করেছে। দক্ষিনে ভাংগা ও শিবচর উপজেলা। পশ্চিমে নগরকান্দা ও ফরিদপুর সদর উপজেলা।
সদরপুর উপজেলা ৯ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১৩০ টি। মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ২৫ টি। উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রী কলেজ রয়েছে ২ টি।
দাখিল, আলীয়া ও ফাযিল মাদ্রাসা রয়েছে ৫ টি।
জামে মসজিদ রয়েছে ৪৫২ টি।
জেলা সদর থেকে সদরপুর উপজেলা সদরের দুরত্ব ৩৫-৪০ কিলোমিটার। সরাসরি লোকাল বাস চলাচল করে। এছাড়া অটো রিক্সা, সিএনজি ও ছোট ছোট যাত্রী পরিবহন ট্রাকগুলোও চলাচল করে।
সদরপুর উপজেলার সাথে কোন ট্রেন যোগাযোগ স্থাপন করা হয়নি।
Last updated at 6 months ago