ফরিদপুর জেলার উপজেলাসমূহ >> মধুখালী উপজেলা
মধুখালী উপজেলা
- প্রতিষ্ঠা সালঃ ১৯৮৩ সাল
- আয়তনঃ ২৩০.২০ বর্গকিলোমিটার
মধুখালীর ভূষণা একটি ঐতিহাসিক এলাকার নাম। মুর্শিদকুলী খানের রাজস্ব ব্যবস্থায় ভূষণাকে একটি চাকলায় পরিনত করা হয়। বর্তমান ফরিদপুর জেলার একটি অংশ এর অন্তর্ভূক্ত ছিল। বাংলার পূর্বাঞ্চলে মোঘল আক্রমন প্রতিহতকারী বারো ভূইয়াদের একজন স্থানীয় প্রধান রাজা মুকুন্দরায়ের প্রশাসনের কেন্দ্র হিসেবে ভূষণা বিখ্যাত হয়ে উঠে। সপ্তদশ শতকে তৎপুত্র সত্যজিত মোঘলবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করে পরাজিত হন এবং সত্যজিতের পুত্র সীতারাম মোঘলদের আদিপত্য স্বীকার করে নিলে ভূষনা এবং ফতেহাবাদের জমিদারি ফিরে পান এবং অবশেষে ক্ষমতা ও সম্পদ লাভ করেন। ভূষণা হতে দশ মাইল দূরে বাগজানীতে রাজধানী স্থাপন করে এক দীর্ঘ মাটির বাঁধ এবং পরিখা দ্বারা সুরক্ষিত করেন। ভূষণার ফৌজদারের সঙ্গে সীতারামের দ্বন্দ সংঘাত এবং অবজ্ঞাসূচক মনোভাবের ফলে মুর্শিদকুলী খানের সময় তাকে দমন করা হয়। তার জমিদারী বাজেয়াপ্ত করে রাজশাহীর জমিদার রামজীবনকে প্রদান করা হয়। সীতারামের দূর্গের ধ্বংসাবশেষ এখনও ভূষণায় দেখতে পাওয়া যায়। ভূষণা দূর্গ বর্তমানে ধ্বংসপ্রাপ্ত, ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার নোয়াপাড়াস্থ কিলাবাড়ি গ্রামে অবস্থিত। ফরিদপুর জেলা শহর থেকে প্রায় ২৫ কি.মি দক্ষিণ পশ্চিমে মধুমতি বারাসিয়া নদীর মিলনস্থলে এর অবস্থান। ভূষণার সর্ব প্রথম শাসনকর্তা হিসেবে ধেনুকর্ণের নাম জানা যায়। তিনি শহরের উত্তরাংশ অধিকার করে বংগভূষণ উপাধি ধারণ করেন। এ শহর থেকে তার রাজ্যের নামকরণ করা হয় ভূষণা। সুলতানী আমলে নসরত শাহ এর সতেরটি টাকশাল হিসাবে ভূষণা গুরত্ব পায়। ভূষণা দুর্গটি আয়তাকার। এর উত্তর-দক্ষিণে প্রায় ৩৯৬.৩৪ মিটার লম্বা এবংপূর্ব পশ্চিমে প্রায় ৩৬৫.৭১ মিটার চওড়া। চারদিকে মাটির প্রাচীর দ্বারা দূর্গটি সুরক্ষিত ছিল। প্রাচীরের ভিতরে ও বাইরে উভয় দিকে ২৪৪ মিটার পরিখা ছিল। দক্ষিণ দিকে ছিল দুর্গের একটি মাত্র প্রবেশ দ্বার। পূর্ব দ্বারের ৩০ মিটার পূর্বে একটি মসজিদ স্থাপন করা হয়েছিল। মসজিদের ৩০ মিটার উত্তর পূর্ব দিকে ইটের তৈরি পুরনো ও ধ্বংস প্রাপ্ত একটি কুপ রয়েছে এবং এর পাশে রয়েছে ইটের তৈরি জলাধার। অনেকে মনে করেন মসজিদটি সুলতানী আমলে নির্মিত।
১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ক্ষমতা দখলের পর ভূষণা ফৌজদারের নাম পরিবর্তন করে নতুন নামকরন করা হয় ভূষণা পল্টন। পল্টন পরিচালনা করার জন্য একজন প্রশাসক নিযুক্ত করা হয়। ইংরেজ শাসনের শুরু থেকেই নীলচাষের জন্য নীলকুঠি গড়ে উঠে। জজ বেন্টন নীলকুঠি স্থাপন করে কৃষকদের নীলচাষে বাধ্য করান। নীলচাষীদের উপর প্রচন্ড নির্যাতন এবং অত্যাচার করা হতো। কৃষকদের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হতো।
১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে ভূষনা পল্টনের নাম পরিবতন করে ভূষণা থানা নামকরন করা হয়। ইংরেজ শাসন-শোষণ ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করার জন্য প্রশাসনিক সংস্কারের নামে পুলিশি ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়। ১৯০৪ খ্রিস্টাবেদ পুনরায় ভূষণা মধুখালীতে প্রজা বিদ্রোহ হলে জজ বেন্টন নিহত হন।
মধুখালী উপজেলার উত্তরে বালিয়াকান্দি ও রাজবাড়ী সদর, দক্ষিনে বোয়ালমারী ও মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর উপজেলা, পূর্বে ফরিদপুর সদর উপজেলা এবং পশ্চিমে মাগুরা সদর ও মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলা।
মধুখালী উপজেলায় রয়েছেঃ
Last updated at 8 months ago