ফরিদপুর জেলার ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান >> কানাইপুর শিকদার বাড়ী
কানাইপুর শিকদার বাড়ী
- প্রতিষ্ঠা সালঃ আনুমানিক ৪০০ বছর আগে
- ঠিকানাঃ শিকদার বাড়ী, কানাইপুর, ফরিদপুর সদর
- যোগাযোগঃ
ফরিদপুর শহর থেকে প্রায় ৬ কিঃমিঃ পরে দক্ষিণ পশ্চিমে এবং কানাইপুর বাজার থেকে উত্তরে ফরিদপুর-যশোর মহাসড়কের কাছে কানাইপুর গ্রামের পূর্বমূখী একটি পুরাতন বাড়ি রয়েছে। স্থানীয় ভাবে এটি শিকদার বাড়ি নামে পরিচিত। এ বাড়িটি কুমার নদীর পূর্ব তীরে অবস্থিত।
এ বাড়িটির পূর্বপাশ দিয়ে গ্রামের একটি মেঠোপথ চলে গেছে। এ বাড়িটির দুটি অংশ রয়েছে । একটি বাইরের ও আরেকটি ভিতরের অংশ। ভবনটির পূর্ব দিকের বারান্দার মাঝখানে একটি প্রবেশ পথ রয়েছে। এই প্রবেশপথ দিয়ে দিয়ে সহজেই ভবনের বাইরে ও ভেতরের আঙিনায় ঢুকতে পারা যায়। অন্যদিকে ভিতরের আঙিনায় ঢোকার জন্য দুটি প্রবেশ পথ রয়েছে। তবে পূর্ব পাশের পথটির ছাদ থাকলেও পশ্চিম পাশের পথটি উপরে খোলা। প্রসাদটির অভ্যন্তরে একটি দ্বিতল আবাসিক ভবন রয়েছে। ভবন সংলগ্ন চারপাশে খোলা বারান্দা আছে। ফরিদপুরের জমিদার শাসনের ইতিহাস বেশ সমদ্ধ, এখানকার খ্যাতনামা জমিদার বংশ গুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল কানাইপুরের ‘শিকদার বংশ’। এদেরই বাসস্থানের ধবংসাবশেষ আজ আমরা দেখতে পাই ‘শিকদার বাড়ি’ হিসেবে। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদৌলার শাসনামলেরও প্রায় শতবছর পূর্বে এই জমিদার শিকদার বাড়ী প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে স্থানীয় লোকজন থেকে জানা যায়। জমিদার হিসেবে শিকদার বংশের উন্নতি শুরু হয় ভবতারিনী শিকদারের আমল থেকে। বিধবা রানী ভবতারিনী তার একমাত্র সন্তান সতীশ চন্দ্র শিকদার এবং অপর এক বিপত্নিক কর্মচারীর সহায্যে তার জমিদারি পরিচালনা করতেন। তবে ভবতারিনীর এই একমাত্র পুত্র সুশাসকের চাইতে উদ্ধত, অহংকারী এবং কুটনৈতিক হিসেবে বেশি পরিচিত ছিলেন।
পরবর্তীকালে সতীশ চন্দ্র শিকদারের দুই পুত্র সুরেন্দ্র নাথ শিকদার এবং নিরদবরন শিকদারের মধ্যে জমিদারি ভাগাভাগি হয়ে যায় এবং সুরেন্দ্র নাথ বড় সন্তান হিসেবে জমিদারীর সিংহভাগ মালিকানা লাভ করে। সুরেন্দ্র নাথের অকাল মত্যুর পরে তার স্ত্রী রাধা রানি শিকদার জমিদারি পরিচালনা করা শুরু করেন। রাধা রানী শিকদারের মত্যুর পর পুত্রদের কোলকাতায় অভিবাসন এবং অর্থনৈতিক ভাঙ্গনের কারণে এক সময়ে এই জমিদারি তৎকালীণ সরকার বাজেয়াপ্ত করে নেয়। বর্তমানে এটি অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে। যদি এটিকে ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্বিক একটি নিদর্শন হিসাবে সরকারিভাবে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা যেত তবে সরকার যেমন একদিকে আথিক লাভবান হবে তেমনি দর্শনার্থীরাও এটিকে একটি ঐতিহাসিক বিনোদন কেন্দ্র হিসাবে দেখতে পেত। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলে দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
Last updated at 1 year ago
www.priofaridpur.com
Thursday, 21st November 2024