ফরিদপুর জেলার ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান >> মথুরাপুর দেউল, মধুখালী
মথুরাপুর দেউল, মধুখালী
- প্রতিষ্ঠা সালঃ আনুমানিক ১৩৯৩ থেকে ১৪১০ খ্রিঃ
- ঠিকানাঃ গাজনা, মধুখালী, ফরিদপুর
- যোগাযোগঃ
ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলায় অবস্থিত ফরিদপুর চিনিকলের কয়েকশ গজ উত্তরে মথুরাপুর গ্রামে কালের নীরব স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে শত শত বছরের আগের স্থাপত্য শিল্প মথুরাপুর দেউল। মধুরাপুর দেউল ষোড়শ শতাব্দীর একটি স্থাপনা। এর গঠনপ্রকৃতি অনুসারে একে মন্দির বললে ভুল হবে না। এটি একটি রেখা প্রকৃতির দেউল। মথুরাপুর দেউলটি ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার গাজনা ইউনিয়নে অবস্থিত। কথিত আছে সংগ্রাম সিং নামক বাংলার এক সেনাপতি এটি নির্মাণ করেছিলেন।
খ্রিস্টপূর্ব ১৬৩৬ সালে ভূষণার বিখ্যাত জমিদার সত্রজিতের মৃত্যুর পর সংগ্রাম সিংহকে এলাকার রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং তৎকালীন শাসকের ছত্রছায়ায় তিনি বেশ ক্ষমতাবান হয়ে উঠেন। এলাকার রীত অনুসারে তিনি কপান্তি গ্রামের এক বৈদ্য পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করেন এবং মধুরাপুরে বসবাস করতে শুরু করেন। অন্য এক সূত্রমতে সম্রাট আকবরের বিখ্যাত সেনাপতি মানসিং রাজা প্রতাপাদিত্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধজয়ের স্মারক হিসাবে এই দেউল নির্মাণ করেছিলেন। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মধুখালী বাজার থেকে মধুখালী-রাজবাড়ী ফিডার সড়কের ঠিক দেড় কিলোমিটার উত্তরে দেউলটির অবস্থান। দেউলটির পশ্চিমে রয়েছে চন্দনা নদী। দেউলটি প্রায় ৯০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট এবং কারুকাজ খচিত। এই দেউলটির গায়ে রয়েছে টেরাকোটার দৃষ্টিনন্দন ও শেল্পিক কাজ। দেউলটির শরীর জুড়ে রয়েছে শিলা খন্ডের ছাপচিত্র। রয়েছে মাটির ফলকের তৈরী অসংখ্য ছোট ছোট মুর্তি-যা দশীনার্থীদের কাছে আকর্ষনীয়, দেউলটির গায়ে সেঁটে দেওয়া ছোট ছোট মুর্তির মধ্যে রয়েছে বিবস্ত্র, নর-নারী, নৃত্যরত নগ্ননর-নারী, তীর ধনুক হাতে হনুমান, পেঁচা, জাতীয় পাখি, মস্তকবিহীন মানুষের প্রতিকৃতি, দ্রুত গামী ঘোড়া ইত্যাদি। বাংলার ইতিহাসে এর নির্মাণশৈলী অনন্য বৈশিষ্ট বহন করে। এটি প্রত্নতত্ব অধিদপ্তর ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের একটি সম্পদ।
Last updated at 1 year ago
www.priofaridpur.com
Thursday, 21st November 2024