ফরিদপুর জেলার ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান >> বাইশরশি জমিদার বাড়ী, সদরপুর
বাইশরশি জমিদার বাড়ী, সদরপুর
- প্রতিষ্ঠা সালঃ আনুমানিক ১৭০০ সালের প্রথম দিকে
- ঠিকানাঃ বাইশরশি, সদরপুর, ফরিদপুর
- যোগাযোগঃ
ষোল দশকের ষোল দশকের শেষের দিকে ভারত থেকে ব্যবসা করতে ফরিদপুরের সদরপুরে আসেন বাবু সুকুমার সাহা। ১৭ শতকের শুরুর দিকে ব্যবসা-বানিজ্যের কারনে এখানে গড়ে তোলেন তার বিশাল জমিদারী। জমিদারদের প্রধান আয়ের উৎস ছিল ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থা। খাজনা বা কর আদায় করার জন্য নায়েব নিযুক্ত করা হতো। অবাধ্য প্রজাকে শায়েস্তা করার জন্য লাঠিয়াল বাহিনী ব্যবহার করা হতো। অপরাধ অনুসারে এই প্রজাদের অত্যাচার করা হতো। অত্যাচারের ফলে কারও মৃত্যু হলে মৃতদেহ বাড়ির পেছনে গভীর অন্ধকূপে নিক্ষেপ করা হতো। বাবুদের বাড়ির সামনে দিয়ে জুতা পায়ে, ছাতা মাথায় দিয়ে যাতায়াত নিষেধ ছিল। বাবুদের চারটি পুকুরের মধ্যে নাট মন্দিরের সামনের পুকুরটি পানীয় জলের জন্য রক্ষিত ছিল। ওই পুকুরে কেউ পা ভেজাতে পর্যন্ত পরত না। বেচু নামে এক মুসলমান প্রজা অজ্ঞতাবশত ওই পুকুরে পা ধোয়ার অপরাধে তাকে বেদম প্রহার ও গোপ-দাড়ি তুলে ফেলা হয়। আর তা নিয়ে মামলা হলেও বাবুদের মাত্র এক পাই জরিমানা হয়। মনিক দহের বড় মিয়া আবদুল বাবুদের বশ্যতা স্বীকার না করার জন্য বাবুরা তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। বড় মিয়া আবদুল উপায়ন্তর না দেখে শিবসুন্দরী চৌধুরানীকে মা ডাকেন। পরে শিবসুন্দরী চৌধুরানীর হস্তক্ষেপে বড় মিয়া আবদুলকে মামলা হতে অব্যাহতি দেওয়া হয়। বাইশরশি শিবসুন্দরী একাডেমীর বর্তমান খেলার মাঠ বাবুদের চিত্তবিনোদনের জন্য বাগানবাড়ি ছিল। তারা ওই বাগানবাড়িতে খেয়াল-খুশি মত আনন্দ-ফুর্তি করত।
১৯৫০ সালে জমিদারি প্রথা বিলুপ্তি ও প্রজাস্বত্ব আইন প্রণয়ন হওয়ার পর রমেশবাবু অর্থ এবং বিত্তহীন হয়ে পড়লে জমিদারি হারিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসায় লোকসান ও বাড়ির দাসী কর্তৃক সঞ্চিত স্বর্ণখণ্ডাদী চুরি হওয়ায় রমেশবাবু নিজে বন্দুকের গুলিতে আত্মহত্যা করেন। এরপর জমিদার পরিবারের সদস্যরা কলকাতা চলে যান এবং অমরেশ বাবু দিনাজপুর চলে যান। এভাবেই বাইশরশি জমিদারদের জমিদারির বিলুপ্তি ঘটে।
Last updated at 1 year ago
www.priofaridpur.com
Monday, 30th December 2024