ফরিদপুর জেলার স্মরণীয় ব্যক্তিবর্গ >> আ ন ম আবদুস সোবহান
আ ন ম আবদুস সোবহান
- জন্ম সালঃ ১৯৪৩ সালের ২২ মে
- জন্ম স্থানঃ ফরিদপুর শহরের গুড় বাজারে অবস্থিত পৈত্রিক বাড়িতে
- মৃত্যু সালঃ
আ ন ম আবদুস সোবহানের আদি নিবাস গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার নারায়নপুর গ্রামে। শিশুকাল থেকেই বড় হয়েছেন জন্ম স্থান ফরিদপুর জেলা শহরে। পিতা আলহাজ্ব আব্দুল মজিদ আইনজীবী ছিলেন। মাতা আলিমন নেছা গৃহিনী ছিলেন।
ফরিদপুর হিতৈষী স্কুলে লেখাপড়া শুরু হয়। এরপর ফরিদপুর জিলা স্কুল থেকে ১৯৬১ সালে মাধ্যামিক পাশ করেন। ১৯৬৪ সালে রাজেন্দ্র কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক এবং ১৯৬৬ সালে ডিগ্রি পাশ করেন। পরবর্তীতে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ১৯৬৮ সালে এম এ পাশ করেন এবং ১৯৭৪ সালে এল এল বি ডিগ্রী অর্জন করেন। ছাত্র জীবনেই তিনি সাংবাদিতা পেশায় যুক্ত হন। দৈনিক আজাদ এর ফরিদপুর প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করতেন তিনি।
এরপর লেখাপড়া শেষ করে অধ্যাপনা পেশায় যোগদান করেন ১৯৭০ সালে ফরিদপুর ইয়াছিন কলেজে। ১৯৮৯ সালে সদরপুর সরকারি কলেজে যোগদান করেন এবং সেখান থেকে ১৯৯১ সালে বিভাগীয় প্রধান হিসাবে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে যোগদান করেন এবং উপাধ্যক্ষ পদে পদন্নোতি প্রাপ্ত হন। ২০০৩ সালে অধ্যক্ষ হয়ে সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ গোপালগঞ্জে যোগদান করেন।
২০০৪ সালে শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষের সম্মান অর্জন করেন।
২০০৫ সালে অধ্যক্ষের পদ হতে অবসর গ্রহন করেন। এছাড়া জীবনের বিভিন্ন সময়ে প্রকাশনা ও মুদ্রন শিল্পের সাথে জড়িত ছিলেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত সূর্যমূখী প্রকাশনী (১৯৭৭) ও সূর্যমূখী মুদ্রায়ন (১৯৮৫) ফরিদপুরে আধুনিক প্রকাশনা শিল্পের সূচনা করে। ছাত্র জীবনে তিনি পূর্ব পাকিস্থান ছাত্র ইউনিয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন ১৯৬৫ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ইউনিয়নের সক্রিয় সদস্য ছিলেন ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত। এরপর ছাত্র ইউনিয়ন সাংস্কৃতিক সংসদের সহসভাপতি ছিলেন।
তিনি ফরিদপুর সাংবাদিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা কোষাধ্যক্ষ এবং পরবর্তীতে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বর্তমানে ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সদস্য। প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ফরিদপুর সাহিত্য ও সংস্কৃতি উন্নয়ন সংস্থা (১৯৯৯) ও পরবর্তীতে সাধারণ সদস্য হিসাবে যুক্ত আছেন। প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক, লেখক শিবির ফরিদপুর (১৯৭৮)। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ভাসানী স্মৃতি সংসদ (১৯৭৬-বর্তমান)। সভাপতি, ফরিদপুর মুদ্রন মালিক সমিতি (১৯৮২-৮৮)। সভাপতি, কবিতা পরিষদ, ফরিদপুর ইউনিট (১৯৯০)। সভাপতি, ফরিদপুর লেখক সমিতি (১৯৯১-১৯৯৩)। প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, পরিচর্যা হাসপাতাল (১৯৯৪)। আহবায়ক ও প্রথম সভাপতি, সচেতন নাগরিক কমিটি, টি আই বি ফরিদপুর (২০০৬)। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে সক্রিয় ভাবে যুক্ত ছিলেন ফরিদপুর শিল্পকলা একাডেমী, যক্ষা সমিতি, জসীম পরিষদ, ফরিদপুর মিউজিয়াম ও সিপিডির সঙ্গে। সাহিত্য চর্চা শুরু হয় স্কুল জীবন থেকেই। লেখালেখি কবিতা ও ছোট গল্প দিয়ে শুরু হলেও পরবর্তীতে সাহিত্য বিষয়ক প্রবন্ধ ও ইতিহাস গবেষণায় সময় অতিবাহিত করেন।
ফরিদপুরে প্রথম শহীদ স্মরনিকা (১৯৬৪) ও প্রথম লিটিল ম্যাগ আন্দোলনের অংশ হিসাবে সাহিত্য পত্র (১৯৬৫) প্রকাশ করেন। বর্তমানে সম্পাদনা করছেন ইতিহাস বিষয়ক গবেষণা পত্র ফরিদপুর: ইতিহাস ও ঐতিহ্য ২০০৬ সাল হতে। ইতিমধ্যে যার ৮ টি সংকলন প্রকাশিত হয়েছে। কলাম লেখক- দৈনিক আমাদের সময়, দৈনিক সমকাল ও দৈনিক বাংলাদেশ সময়। লেখকের প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- ফরিদপুরের কবি সাহিত্যিক (প্রবন্ধ গবেষনা ১৯৬৯), শব্দের আকাঙ্খায় সূর্য (কবিতা ১৯৭৩- যৌথ- হাবিবুল্লাহ সিরাজী, আতাহার খান, শেখ শামসুল হক), তিনটি তারায় একটি ত্রিভুজ (কবিতা ১৯৭৮), ফুলজান ও অন্যান্য (গল্প ১৯৭৯)। নজরুল অর্ন্তজগত (প্রবন্ধ ১৯৯১), ফরিদপুরের ইতিহাস (১৯৯৪), বৃক্ষ মানব (কবিতা ১৯৯৭), শতাব্দীর জননেতা মওলানা ভাসানী ( ইতিহাস গবেষণা ২০০৩), অম্বিকাচরন মজুমদার (জীবনী ২০০৪), জসীম উদদীন প্রেক্ষিত ও কাল (প্রবন্ধ ২০০৬), ফরিদপুরের লেখক অভিধান (গবেষণা ২০০৭), প্রসঙ্গ সাহিত্য ও রাজনীতি (প্রবন্ধ ২০০৭), ফরিদপুর; সংবাদপত্র ও সাংবাদিক (গবেষণা ২০০৮), অধ্যাপকের ডায়েরি (স্মৃতিকথা ২০১০), ফরিদপুর; সঙ্গীত প্রসঙ্গ (২০১১)।
সাহিত্য চর্চায় অসামাণ্য অবদানে জসীম উদদীন স্বর্ণ পদক লাভ করেন ১৯৯২ সালে । মওলানা ভাসানী পুরস্কার লাভ করেন ২০০৬ সালে। এছাড়াও তিনি পদ্মা পুরস্কার (ফরিদপুর), নির্ণয় পুরস্কার (ফরিদপুর), অরুনিমা পুরস্কার (ঈশ্বরদী), কবিতা পরিষদ পুরস্কার (পাবনা) অর্জন করেছেন। স্ত্রী ফিরোজা বেগম একজন অবসর প্রাপ্ত অধ্যাপক, কন্যা ডাঃ শারমিন সোবহান, পুত্র স্থপতি অভিক সোবহান।
[লেখক- ফরিদুজ্জামান, কবি, প্রকৌশলী ও প্রাবন্ধিক]
Last updated at 1 second ago
www.priofaridpur.com
Thursday, 21st November 2024