ফরিদপুর জেলার স্মরণীয় ব্যক্তিবর্গ >> ফকির আলমগীর
ফকির আলমগীর
- জন্ম সালঃ ১৯৫০ সালের ২১ শে ফ্রেব্রুয়ারি
- জন্ম স্থানঃ ফরিদপুর জেলাধীন ভাঙ্গা উপজেলার কালামৃধা গ্রাম
- মৃত্যু সালঃ ২৩ জুলাই ২০২১
ফকির আলমগীর ১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের স্মরণীয় দিনটিতে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
পিতা-মরহুম মৌ: হাচেন উদ্দীন ফকির, মা বেগম- হাবিবুন্নেসা। ফকির আলমগীর কালামৃধা গোবিন্দ হাই স্কুল থেকে ১৯৬৬ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে দেশের ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে স্নাতক ডিগ্রী নিয়ে পরবর্তী পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় এম, এ পাশ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী ও গণশিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য হিসাবে ষাটের দশকে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে এবং ৬৯’ এর গণ অভ্যুত্থানে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে শিল্পী ফকির আলমগীর একজন শব্দ সৈনিক হিসাবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দেন। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে নিয়মিত সংগীত পরিবেশনার পাশাপাশি প্রচলিত ও প্রথাসিদ্ধ গানের বদ্ধ ভূমিতে দেশজ ও পাশ্চাত্য সংগীতের মেল বন্ধন ঘটিয়ে বাংলা গানে নতুন মাত্রা সংযোজন করেন। সংগীত ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের সান্নিধ্য তাঁকে করে তোলে আরও প্রতিশ্রুতিশীল, গনমুখী ও জনপ্রিয়। ১৯৭৬ সনে গঠন করেন ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীর মাধ্যমে গনসঙ্গীতকে তিনি সাধারণ মানুষের কাছে পৌছে দেন। অন্যদিকে একজন সাংস্কৃতিক দূত হিসাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে সফলতার সঙ্গে তুলে ধরেছেন।
সঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীর একজন সফল কলামিষ্ট ও লেখক। তার প্রকাশিত গ্রন্থ – চেনাচীন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও বিজয়ের গান, গনসঙ্গীতের অতীত ও বর্তমান, গনসঙ্গীত ও মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধে বিদেশী বন্ধুরা, আমার কথা সুধীমহলে সমাদৃত হয়েছে। রেডিও টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও মঞ্চে সঙ্গীত পরিবেশনায় তিনি এখনও সক্রিয়। চির সবুজ এই কন্ঠশিল্পী সঙ্গীতের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য ‘একুশের পদক’, ‘শেরে বাংলা পদক’, ‘ভাসানী পদক’, ‘সিকোয়েন্স অ্যাওয়ার্ড অব অর্নার’, ‘তর্কবাগীশ স্বর্ণ পদক’, ‘জসীম উদদীন স্বর্ণ পদক’, ‘গণনাট্য পুরস্কার’, ‘ত্রিপুরা সংস্কৃতি সমন্বয় পুরস্কার’, ‘বাংলাদেশ জনসংযোগ সমিতির পুরস্কার’, ‘ক্রান্তি পদক’, ও বাংলা একাডেমির সম্মানজনক ফেলোশীপসহ দেশে ও দেশের বাইরে অনেক সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে সঙ্গীতে মহাসম্মানে ভূষিত করেছেন।
ফকির আলমগীর ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও গনসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি। এছাড়া সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতি, জনসংযোগ সমিতির সদস্য, বাংলা একাডেমীর আজীবন সদস্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গনযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা, আধুনিক সদস্য, খিলগাঁও সামাজিক সংস্থার উপদেষ্টা, বাংলাদেশে সঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের উপদেষ্টা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের সদস্য, অফিসার্স ক্লাবের সদস্য। শিল্পী পেশায় বিসিআইসির জনসংযোগ বিভাগের একজন সাবেক মহাব্যবস্থাপক ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত। স্ত্রী সুরাইয়া আলমগীর। তিন পুত্র সন্তান রানা, রাজীব, রাহুল। তিনি ২০০৭ সালে পিতামহ হয়েছেন। বর্তমানে তাঁর তিন পৌত্র ফারদিন, ফারহান, উজান। ফারিন নামে একজন নাতিন রয়েছে। ২০১৯ সালে তিনি পবিত্র হজ্বব্রত পালন করেছেন।
Last updated at 1 second ago
www.priofaridpur.com
Thursday, 21st November 2024