ফরিদপুর জেলার স্মরণীয় ব্যক্তিবর্গ >> চারুচন্দ্র চক্রবর্তী (জরাসন্ধ)
চারুচন্দ্র চক্রবর্তী (জরাসন্ধ)
- জন্ম সালঃ ১৯০২ সালে
- জন্ম স্থানঃ ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার ব্রাহ্মনকান্দা গ্রামে
- মৃত্যু সালঃ ১৯৮১ সালের ২৫ মে
চারুচন্দ্র চক্রবর্তী জরাসন্ধ ছন্দনামে পরিচিত লাভ করেছেন লেখক হিসাবে। ১৯২৬ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে এম.এ পাশ করে দার্জিলিং-এ ডেপুটি জেলার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিরিশ বছর নানা জায়গায় চাকুরী করার পর ১৯৬০ সালে আলীপুর সে জেলের সুপারিন্টেনডেন্ট হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। এই সময়ে বিভিন্ন জেলের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কয়েদীদের জীবনাচরণ তিনি অত্যন্ত গভীর ভাবে উপলব্ধি করেন। কারাজীবনের নির্মম ও অমানবিক পরিপ্রেক্ষিত নিয়ে চারুচন্দ্র চক্রবর্তী 'জরাসন্ধ' ছদ্মনামে আলীপুর সেন্ট্রাল জেলের জেলর থাকাকালে বিখ্যাত উপন্যাস 'লৌহ কপাট' (১৯৫২) লিখে বাংলা কথা সাহিত্যে সুবিশাল পরিচিতি নিয়ে বিখ্যাতও হন। চারখণ্ডের 'লৌহকপাটে'র তিনটি খণ্ডই তাঁর চাকুরিজীবনে লেখা। চতুর্থ খণ্ডটি লেখেন অবসর নেওয়ার পরে এবং কারো কারো মতে সেটিই সর্বশ্রেষ্ঠ খণ্ড। 'লৌহকপাট' ছাড়াও আরও প্রায় কুড়িটি উপন্যাস তিনি লিখেছেন। 'তামসী', 'পাড়ি', 'সীমারেখা', 'ন্যায়দণ্ড', ‘পরশমনি’, 'উত্তরাধিকার', ‘তৃতীয় নয়ন’, ‘রঙ চঙ’, ‘পলাশ ডাঙার ঝড়’, ‘আবরণ’, ‘একুশ বছর’ ‘ছায়াতীর’, ‘ছবি’, ‘সপ্তষি’,‘মল্লিকা’ ‘অশ্রু বন্যা’ ‘রবিবার’, ‘পরিসর’, ‘যমরাজের বিপদ’ প্রভৃতি। তাঁর আত্মজীবনীমূলক লেখা হল 'নিঃসঙ্গ পথিক' । এছাড়া ছোটগল্প এবং ছোটদের জন্য লেখা গল্পও বেশ কিছু আছে। সাহিত্যিক “জরাসন্ধ” তাঁর কর্মজীবন কে সাহিত্যের পাতায় তুলে এনেছিলেন অত্যন্ত সফলতার সাথে। বাংলা সাহিত্যের আর কোন লেখকের লেখায় তাঁর নিজের কর্মজীবনের চালচিত্র এমন প্রত্যক্ষ ভাবে সাহিত্যে উঠে আসেনি। সাহিত্যিক জরাসন্ধ তৎকালীন পূর্ব বাংলা বর্তমানে বাংলাদেশে জন্ম নেয়া এক ক্ষণজন্মা কৃতি সন্তান। কিন্তু বাংলাদেশের পাঠক সমাজের কাছে জরাসন্ধের সাহিত্য যতটা উজ্জ্বল, তাঁর ব্যাক্তি পরিচয় ততটাই অন্ধকারে। বেশিরভাগ পাঠকই জানেন না যে তিনি বাংলাদেশে জন্ম নেয়া একজন সাহিত্যিক। এমন কি তাঁর জন্মস্থান ফরিদপুরের ব্রাহ্মণডাঙ্গা গ্রামের মানুষেরও তাঁর সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। জরাসন্ধ-যেন এক ভুলে যাওয়া নক্ষত্র।
Last updated at 1 second ago
www.priofaridpur.com
Thursday, 21st November 2024